‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় লাগাতার গোলাবর্ষণ করছে পাকিস্তান। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাও। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা বৃদ্ধির লাগাতার চেষ্টা করছে পাক সেনা। নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া এলাকাগুলি লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করে চলেছে পাকিস্তান।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাক ভূখণ্ডে প্রত্যাঘাত করে ভারত। সেই প্রত্যাঘাতের পর পরই জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ, রাজৌরি, আখনুর এবং বারামুলায় নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাবর্ষণ করছে। সেই গোলাবর্ষণেই নিহত হয়েছেন ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ল্যান্সনায়েক দীনেশ শর্মা। পুঞ্চে সেনার এফডি রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান টানা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করায় সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল ৫ এফডি রেজিমেন্টের জওয়ানদের। সেই দলে ছিলেন দীনেশ। পাকিস্তানের ছোড়া গোলায় জখম হন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর।
দীনেশের বন্ধু প্রদীপ বলেন, ‘‘৬ মে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দীনেশকে ফোন করেছিলাম। ওর সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা হয়েছিল। তখনই আমাকে বলেছিল, ‘মিশনে যাচ্ছি। যা হবে সব খবরাখবর দেব।’ তার পর ৭ মে ভোর ৪টের সময় দীনেশের ফোন আসে। কিন্তু আমি ফোন ধরতে পারিনি।’’ প্রদীপ আরও বলেন, ‘‘পরে আমি ফোন করি দীনেশকে। শুধু ‘হ্যালো’ শোনার পরই ফোনটা কেটে গিয়েছিল। সকাল ৭টায় আবার ফোন করি। ও পাশে ফোন ধরতেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ভাই, সব ঠিক আছে তো? কিন্তু দীনেশ নয়, অন্য এক জন ফোন ধরেছিলেন। তিনি জানান, গোলাবর্ষণে দীনেশ আহত হয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। তার কিছু পরেই বন্ধুর মৃত্যুসংবাদ আসে।’’
দীনেশরা পাঁচ ভাই। তাঁর বাবা দয়ানন্দ শর্মা জানিয়েছেন, পাঁচ ভাইয়ের মধ্য দীনেশ বড়। দীনেশের আরও দুই ভাই সেনায় কর্মরত। তাঁর তুতো ভাইও সেনার মেডিক্যাল বিভাগে কাজ করেন। সেই তুতো ভাই জানিয়েছেন, দীনেশের আট বছরের দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সূত্র: আনন্দবাজার